৩৬জুলাই বিপ্লব শহীদদের সঙ্গে পরিচয় হই এক



সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুগণ ৩৬জুলাই বিপ্লব শহীদদের সঙ্গে পরিচয় হই এক বিষয়ে আজকের আর্টিকেল লেখা শুরু করলাম। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৪ বছর পরেও সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয়নি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলীয় শাসন ব্যবস্থার কারণে এবং পার্শ্ববর্তী দেশের শোষণের কারণে দেশের উন্নয়ন বারবার বাধাগ্রস্থ হয়।
বিশেষ করে দীর্ঘ ১৬ টি বছর ধরে বাংলার জনসাধারণ স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের নির্যাতনে অতিষ্ঠ। এই নির্যাতনের কারণে আস্তে আস্তে বাংলার আপামর জনসাধারণের মনে স্বাধীনতার দানাবাধে। যার ফলশ্রুতিতে 24 এর গণঅভ্যুত্থান।

ভূমিকা

আজকের আর্টিকেল ৩৬জুলাই বিপ্লব শহীদদের সঙ্গে পরিচয় হই এক। ২০২৪ সালের জুলাই আগস্টে বাংলাদেশের প্রতিটি শহর নগর ও বিভিন্ন জায়গায় ফ্যাসিষ্ট বিরোধী আওয়াজ সোচ্চার হয়। স্বৈরাচারী শাসনের দ্বারা নিপীড়নের কারণে বাংলার জনসাধারণের ক্ষোভ ও বিদ্রোহ সঞ্চার হয়। স্বৈরাচারী শাসকের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ও সম্পদ পাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি হয়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবৈধ কোঠার নামে চাকুরী কুক্ষিগত করার বিরুদ্ধে ছাত্রদের মাঝে ক্ষোভ নেমে আসে। যার কারণে বাংলার দামাল ছাত্ররা নির্ভয়ে মাঠে নেমে আসে। আস্তে আস্তে তাদের আন্দোলন অত্যন্ত বেগবান হয়। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্ররা রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।

৩৬ শে জুলাই সুচনা

আজকের আর্টিকেল ৩৬জুলাই বিপ্লব শহীদদের সঙ্গে পরিচয় হই এক। ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ক্ষোভ অগ্নিগর্ভ প্রতিবাদে বিস্ফোরিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদের এই দৃশ্য সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে। সকল ক্যাম্পাসে একটি মাত্র স্লোগান শুরু হয় তা হল তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার।

এই স্লোগানটি শুধু স্লোগান ছিল না এই স্লোগানের বার্তা ছিল স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে। এই শ্লোগান ছিল দুর্নীতিবাজ সম্পদ পাচার স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে। যখন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সকল আন্দোলনকারীদের কে রাজাকারের বাচ্চা বলে মন্তব্য করেন তখন সকল শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি মাত্র স্লোগান শুরু হয়।

স্লোগান টি হল তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার। এই শ্লোগান মূলত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট হাসিনার মন্তব্যের প্রতিবাদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাসিন হল, সূর্যসেন হল, জিয়াউর রহমান হল, রোকেয়া হল, সহ বিভিন্ন হল থেকে গভীর রাতে ছাত্র-ছাত্রীরা টিএসসিতে একত্রিত হয়।

তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার কে বলেছে কে বলেছে স্বৈরাচার স্বৈরাচার, চাইতে গেলাম অধিকার হয়ে গেলাম রাজাকার এই স্লোগানে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় সহ সারাদেশে ছাত্র জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। শুরু হয় ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের আন্দোলন।

৩৬জুলাই বিপ্লব শহীদদের সঙ্গে পরিচয় হই এক

সারাদেশে ছাত্রজনতার উত্তাল আন্দোলনে মুখরিত। ফ্যাসিস্ট সরকার ও তাদের পেটুয়া বাহিনীর আক্রোশের শিকার হন আন্দোলনকারী ছাত্র জনতা। যার ফলশ্রুতিতে ফ্যাসিষ্ট সরকারের পেটুয়া বাহিনীদেরকে লেলিয়ে দেন ছাত্র-জনতার ওপরে।
বিশেষ করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশ বাহিনীদেরকে নিজেদের কর্মী হিসেবে ছাত্র জনতার আন্দোলন বন্ধ করার চেষ্টা করে। বাংলার দামাল ছেলেরা সরকার এর পেটুয়া বাহিনীকে উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যায়। আজকের আর্টিকেল ৩৬জুলাই বিপ্লব শহীদদের সঙ্গে পরিচয় হই এক।

দামাল ছেলে আবু সাঈদের শাহাদত

আজকের আর্টিকেল ৩৬জুলাই বিপ্লব শহীদদের সঙ্গে পরিচয় হই এক। ২০২৪ সালের ১৬ই জুলাই রংপুরের পার্ক মোড়ে শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। ছাত্রদের মিছিল পুলিশ নিষ্ঠুরভাবে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। এই প্রতিরোধের প্রতিবাদে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আমার প্রিয় ভাই আবু সাঈদ দুহাত জাগিয়ে দাড়িয়ে যান।

তার হাতে একটি মাত্র লাঠি ছিল। তিনি দাঁড়িয়ে যেয়ে সকল মিছিল কারী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সাহস জোগাতে থাকেন। ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার পেটুয়া বাহিনী পুলিশ আবু সাঈদের সাহসিকতাকে সহ্য করতে পারেনি। আওয়ামী পুলিশ বাহিনী আবু সাঈদকে পরপর গুলি করে। বীর আবু সাঈদ আস্তে আস্তে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি শাহাদাত বরণ করেন।

আবু সাঈদ এর শাহাদতের এই দৃশ্য বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। আবু সাঈদ এর শাহাদতের ছবি ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশের ছাত্র জনতা নিজের জীবন দেওয়ার জন্য মাঠে নেমে আসে। আবু সাঈদের মৃত্যুতে বাঙালি জাতিগণ অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মত বিক্ষোভে ফেটে পারেন। 

আমার ভাই আবু সাঈদ গরিব কৃষকের ছেলে যে পরিবারের একমাত্র আশা আকাঙ্ক্ষার নক্ষত্র ছিল। আবু সাঈদ ৯ ভাই বোনের মধ্যে একমাত্র উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাওয়া ব্যক্তি। ২০০১ সালে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বাবুনপুর গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন। 

তার পিতার নাম মোহাম্মদ মকবুল হোসেন। মাতার নাম মনোয়ারা বেগম। ছয় ভাই ও তিন বোন মিলে নয় ভাই বোনের মধ্যে আবু সাঈদ সবার ছোট। আবু সাঈদ স্থানীয় জাফর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপরে স্থানীয় খালাস পীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। 

২০১৮ সালের রংপুর সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। এরপর তিনি ২০২০ সালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের ভর্তি হন। তিনি রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের ১২তম দুই হাজার চব্বিশ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও রংপুর অঞ্চলে কোঠা আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

তিনি আন্দোলনকে বেগবান করতে ১৫ ই জুলাই ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থানে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শামসুজ্জোহা কে উল্লেখ করে একটি পোষ্ট দেন। স্যার এই মুহূর্তে আপনাকে ভীষণ দরকার। স্যার আপনার সমসাময়িক সময়ে যারা ছিল সবাই তো মরে গিয়েছে।

কিন্তু আপনি মরেও অমর। আপনার সমাধি আমাদের প্রেরণা। আপনার চেতনায় আমরা উদ্ভাসিত। আবু সাঈদকে গুলি করে শহীদ করে ফেলা হলো, কারণ সে কোটা আন্দোলনে অত্যান্ত বেশী সক্রিয় ছিলো। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সবার জন্য সমান অধিকার চেয়েছিলো।

শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ

‘কারও পানি লাগবে ভাই, পানি?’এভাবে তিনি আমাদের বীর যোদ্ধাদেরকে পানি পান করান। পানি পান করানোর এই বাক্য কারো পানি লাগবে ভাই পানি এটাই ছিল শহীদের সর্বশেষ কথা। তার সর্বশেষ কথার দ্বারাই প্রমাণ হয় তিনি একজন সমাজসেবক এবং প্রিয় ভাইদের সহযোগী ছিলেন। কথাগুলো বলছি শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ যে আমাদের মাঝ থেকে অনেক কষ্ট দিয়ে শহীদ হয়েছেন।

আজকের আর্টিকেল ৩৬জুলাই বিপ্লব শহীদদের সঙ্গে পরিচয় হই এক। ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৯৮ সালে ঢাকা উত্তরায় জন্মগ্রহণ করেন বাংলার কিংবন্তী শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ। তার বাবার নাম মীর মোস্তাফিজুর রহমান ও মায়ের নাম সাহানা চৌধুরী। তাদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ ও মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ দুই ভাই ছিলেন জমজ।

মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ ২০২৩ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় হতে গণিত স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর তিনি প্রফেশনালসে এমবিএ করতে ছিলেন। এছাড়া শহীদ হওয়ার আগে তিনি ফাইবারে প্রায় এক হাজারেরও বেশি কাজ করেছেন। তিনি ফুটবলার ভ্রমণপিপাসু এবং বাংলাদেশ স্কাউটের সদস্য ছিলেন।

১৮জুলাই উত্তরার আজমপুর বিক্ষোভকারীরা যখন পিপাসিত হয়ে পড়েন তখন মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ পানি এবং বিস্কিট নিয়ে  খাওয়াতে শুরু করেন। বারবার বলেন পানি লাগবে কারো পানি। যে ব্যক্তি পিপাসিত হয় সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাকে পানি খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন।

এভাবে পানি খাওয়াতে খাওয়াতে বিকাল পাঁচটার সময় হাসিনার পেটুয়া পুলিশ বাহিনী তাকে গুলি করে। তিনি সেখানে লুটিয়ে পড়েন এবং উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্য চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি যেন সারা বাংলাদেশের লোকদেরকে কাঁদিয়ে পরপারে পাড়ি জমান। আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি এবং যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ আমাদের মাঝে অমর হয়ে থাকবে।

শহীদ আলী রায়হান আমাদের প্রেরণা

৫ই আগস্ট ফজরের নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করেন হে আল্লাহ যদি মৃত্যু দাও আমাকে শহীদের মৃত্যু দাও। ছেলেটির দীর্ঘদিনের আশা ছিল সে যেন শহীদের মৃত্যুতে শামিল হয়। এইজন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে ছেলেটি বলতো শহীদের মৃত্যু আমার কাছে খুব পছন্দের। এইজন্য ছেলেটি ছিল অমায়িক ভদ্র পরোপকারী এবং মেধাবী।
ফজরের নামাজ পড়ে বিভিন্ন বন্ধুদের ও কাছের বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে মাফ চেয়ে নেন এবং বলেন দেশের অবস্থা ভালো নয় কখন কি ঘটে যেতে পারে। আপনারা আমাকে সবাই মাফ করে দিবেন। আজকের আর্টিকেল ৩৬জুলাই বিপ্লব শহীদদের সঙ্গে পরিচয় হই এক। ৫তারিখের রাজশাহী মহানগরীর আলু পট্টির দিকে এক বিশাল মিছিল সামনের দিকে যেতে শুরু করে।

মিছিলের নেতৃত্ব দেন আমাদের সেই প্রিয় দামাল ছেলে শহীদ আলী রায়হান। ফ্যাসিড শেখ হাসিনার পেটুয়া বাহিনীর ছাত্রলীগ যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা মিছিল কে উদ্দেশ্য করে বারবার গুলি ছুড়তে থাকে। আলী রায়ান সেই গুলিকে উপেক্ষা করে সবাইকে নিয়ে সামনের দিকে যাওয়া শুরু করেন।

এই সময় গুলি এসে আলিী রায়হানের মস্তক ভেদ করে। শহীদ আলী রায়হান মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরে অস্ত্রপ্রচার করা হয়। তার অবস্থা খারাপ দেখে আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ ই আগস্ট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার সাতটার সময় আমাদের প্রিয় ভাই আলী রায়ান শাহাদাত বরণ করেন।

শহীদ আলী রায়হান রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা শীলমাড়িয়া ইউনিয়নের মঙ্গল পাড়া গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন। কার পিতার নাম মোঃ মুসলিম উদ্দিন এবং মাতার নাম মোছাঃ রোকসানা বিবি। তারা দুই ভাই এর মধ্যে আলী রায়হান বড় এবং ছোট ভাইয়ের নাম রানা ইসলাম। আলী রায়হান গ্রামের স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন।

একই এলাকা থেকে তিনি এইচএসসি পাস করেন। এরপরে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব  বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। ২০২৩ সালে মাস্টার্স সম্পূর্ণ করেন। এরপর তিনি একটি কোর্সে ভর্তি হন এবং তার চাকরির কথাবার্তা চলছিল।আলী রায়হান পড়াশোনার পাশাপাশি ইসলামী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির করতেন।

প্রথমে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও পরবর্তীতে রাজশাহী মহানগর শাখা ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। সাংগঠনিক সম্পাদক থাকা অবস্থায় শহীদ হন। তার মৃত্যুতে সংগঠন ও পরিবারের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।

শহীদ সাকিব আনজুম আমাদের প্রেরণা

আমার ছেলে সবাইকে ছেড়ে আল্লাহর ডাকে চলে গেছে আমরা তাকে দুনিয়াতে আর পাবো না। আমার ছেলে হত্যার সঠিক বিচার চাই। ছেলে হত্যার বিচার হলে ছেলের আত্মার শান্তি পাবে এবং আমরাও কিছুটা সান্তনা পাব। কান্নার জড়িত এমন কন্ঠে এগুলো কথা বলতেছিলেন শহীদ সাকিব আনজুমের মা রোকেয়া খাতুন ও বাবা মইনুল হক।

আজকের আর্টিকেল ৩৬জুলাই বিপ্লব শহীদদের সঙ্গে পরিচয় হই এক। শহীদ সাকিব আনজুম তিন ভাই। বড় ভাই শাকিব আনজুম এবং ছোট দুই ভাই আকিব আনজুম, আসিফ আনজুম। তাদের পিতার নাম মোঃ মইনুল হোসেন ও মাতা রোকেয়া খাতুন। শহীদ সাকিব আনজুম রাজশাহীর বেসরকারী বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

উচ্চ শিক্ষার জন্য নভেম্বর ২০২৪ ফিনল্যান্ডে যাওয়ার কথা ছিল। তাদের বাসা রাজশাহী মহানগরীর হাদীর মোড় এলাকায় রায়নগরে অবস্থিত। তার বাবা মোহাম্মদ মইনুল হক কসমেটিক পণ্যের ডিস্ট্রিবিউটর। পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার ব্যবসায় শহীদ সাকিব আনজুম সহযোগিতা করতেন।

৫ ই আগস্ট রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক স্বৈরাচারিয়া হাসিনার পতনের জন্য মিছিল বাহির করে। মিছিলটি রাজশাহী মহানগরীর আলুপট্টিতে পোছলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশ একসঙ্গে মিছিলটির উপর হামলা করে। সরাসরি তারা সবাই গুলি করে।

হঠাৎ করে শহীদ সাকিব আনজুম গুলি বদ্ধ হন। এ অবস্থায় তাকে পাশের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশকে বারবার মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার কথা বললেও পুলিশ তা শোনেনি। সেখানেই শহীদ শাকিব আনজুম শাহাদত বরণ করেন। শহীদ সাকিব আনজুমেরা বাংলার গর্ব বাংলার বীর।

যাদের জীবনের বিনিময় আজ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।  যতদিন দেশ থাকবে ততদিন শহীদ সাকিব আনজুম বাংলার ছাত্র জনতার আত্মার মধ্যে থাকবে।

লেখক এর মন্তব্য

আজকের আর্টিকেল ৩৬জুলাই বিপ্লব শহীদদের সঙ্গে পরিচয় হই এক। বিষয়ে আজকের আর্টিকেল লেখা শুরু করলাম। দীর্ঘ ১৬ টি বছর বাংলার জনগণ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনে নির্মমভাবে নির্যাতিত হয়ে আসতেছিল। তাদের অত্যাচারের কারণে ছাত্র-জনতার ক্ষোভ বাড়তে থাকে। যার কারণে ৩৬ জুলাই এর আন্দোলন আস্তে আস্তে বেগবান হয়।

আন্দোলনের কারনে ৩৬জুলায় ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যায়। আজকের আর্টিকেলে ৩৬ শে জুলাই এ আন্দোলনের বীর শহীদদের সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। আশা করি আজকের আর্টিকেল আপনাদের ভালো লাগবে এবং অনেক কিছু জানতে পারবেন। আজকের আর্টিকেল ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url